Dr. Pradip Niyogi's Blog

My write ups on a mixed bag of topics – from my perspective


One Month in SanJose

স্যান হোজেতে এক মাস

( ২৭/১১/২০১৯ – ২৬/১২/২০১৯}

আমেরিকার কালিফোর্নিয়া রাজ্যের  কম্পিউটার গবেষণা, সৃষ্টি ও উৎপাদনের কেন্দ্র রূপে বিখ্যাত অঞ্চল silicon valley র  প্রধান সহর হল San Jose  যা  স্যান হোজে উচ্চারিত হয়। এই সহরেই আমার বড় ছেলে সূর্য ও ওর স্ত্রী পরাগ থাকে । অনেক দিন আছে ওরা । 2012 সালের গ্রীষ্মকালে আমি ওদের ওখানে গিয়েছিলাম, তিন মাসের জন্য। পরাগ তখন John Hopkins University তে  MBA করছিল।

শেষ সেমেস্টার, সূর্যদের কোম্পানিতে প্রজেক্ট করছিল। সূর্য Univ. of California, Riverside থেকে Nano Technology তে Ph.D. কোরে Intermolecular নামে একটা কোম্পানিতে Research Scientist রূপে কাজ করছিল। ওরা থাকত Spinnaker Wky নামে একটি রাস্তার উপর। বাড়ির সামনে একটা বড় পার্ক ও পিছনে একটা সবুজ মাঠ ছিল| মাঠটি ঘিরে, তিন দিকে সারি সারি দোতলা বাড়ি, গাছপালায় ঘেরা। দোতলার জানালা দিয়ে, দূরে ছোট  ছোট পাহাড় দেখা যেত। পার্কটি বেশ বড় এবং চার পাশে ছিল বড় বড় গাছ। অনেক শিখ থাকতেন ঐ এলাকায়। তারা পার্কে রোজ আসতেন, অনেকের সঙ্গে বেশ আলাপ হোত।

 সেবার  SFO যাই জর্মানি হয়ে । কলকাতার বাড়ি থেকে যাই  Frankfurt  হয়ে সোজা San Francisco (SFO) airport. ফেরার পথে SFO থেকে Frankfurt এ নামি। আমার  iit Kharagpur এর প্রাক্তন ছাত্র Dr শুভেন্দু হাজরা Mainz University একটা  project এ  কাজ করছে তখন। সে ওই University তে  Indo-German Conference on Fluid Mechanics অর্গানাইজ করে। সেই  Conference এ আমাকে নিমন্ত্রণ করে। তাই আমি Frankfurt এ নেমে  ওদের বাড়িতে সাত দিন থাকি । ওদের বাসা Mainz সহরে, Frankfurt এর কাছে। শুভেন্দু ওর গাাাড়িতে কোরে আমাকে ওদের বাসায় নিয়ে যায়। তখনই লক্ষ্য করি Germany র autobahn(freeway) এ  speed limit নেই, Usa তে অধিকাংশ free way তে  ঘন্টায় 70 মাইল (বা 110 km /ঘন্টায়) speed limit. Frankfurt থেকে দিল্লি হয়ে  কলকাতা ফিরি।

লেকটি একটি মাঝারি মাপের লেক, যাকে পরিক্রমা করতে  হেঁটে আমার 40 মিনিটের মত সময় লাগত।   সূর্যদের বাসা থেকে হেঁটে লেক পর্যন্ত যেতে আমার  সময় লাগত মাত্র 6 মিনিট,  তারপর রাস্তা পার হোতে আরও  মিনিট খানেক বা দুয়েক লেগে যেত। রাস্তা দিয়ে অবিরাম গাড়ি  চলেছে। চৌমাথা ছাড়া ইচ্ছেমত যেখানে সেখানে রাস্তা পার হওয়া নিষিদ্ধ।  লেকটি সুন্দর কোরে ঘেরা   এবং ভিতরে বাঁধানো রাস্তার দুধারে গাছপালা, বসার জায়গা, একাধিক  পিকনিক স্পট, বাচ্চাদের খেলার পার্ক রয়েছে। ভারি সুন্দর জায়গা। ঘেরা অঞ্চলটির নাম Lake Almaden Park.  এর পাশ দিয়ে সরু একটা creek বা পাহাড়ি নদী বয়ে চলেছ। এই ক্রিকের পাশ দিয়ে  বাঁধানো সরু হাঁটার  রাস্তা অনেক দূর চলে গেছে। রাস্তাটি লেক আলমাডেন পার্কের বাইরে। রাস্তাটির এক ধারে রয়েছে ক্রিক আর  অন্য পাশে ছোট ছোট পাহাড়, গাছপালায় ভরা। এই রাস্তায় হাঁটলে মনটা আনন্দে ভরে যায়। নানা বয়সের বহু লোক, পুরুষ মহিলা  এখানে হাঁটেন, অনেকে আসেন কুকুর নিয়ে। নানা ধরণের পাখি দেখা যায়, আর লেকের জলে রয়েছে প্রচুর সাদা  এবং ব্রাউন রাজ হাঁস। প্রথম সপ্তাহের পর থেকে রোজই অন্তত ঘন্টাখানেক আমি এই লেকে কাটিয়েছি। প্রথম সপ্তাহে শরীর ঠিক ছিল না, Jet lag ও প্রচণ্ড constipation এর জন্য।  তার উপর ঠাণ্ডা। আমি শীতকাতুরে। ভীষণ দুশ্চিন্তায় কেটেছে প্রথম কয়েক দিন, মনে হয়েছে পালাই পালাই। Week days এ সূর্যরা নিয়মিত ভোর সাড়ে ছ’টায় কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যেত। প্রথমে পরাগকে ছাড়ত মিনিট কুড়ি দূরের  Freemont rly. স্টেশনে। সেখান থেকে পরাগ ট্রেণ ধরে SFO স্টেশনে যেত, তারপর হেঁটে কর্মস্থলে।  ও একটা ব্যাঙ্কে কাজ করত। পরাগকে  ছেড়ে সূর্য নিজ কর্মস্থলে  যেত। সেখান থেকে গাড়িতে মোটামুটি ঘন্টাখানেক লাগত। সন্ধায় ফেরার পথে পরাগকে তুলে নিয়ে বাড়ি ফিরত পৌনে আটটা/আটটায়।  জরুরি কেনাকাটা থাকলে বাড়ি ফেরার  পথে করত, নাহলে সপ্তাহান্তে একসাথে সব কিনে আনত। বাড়ির ধারে কাছে দোকান নেই। সব চেয়ে কাছের দোকানগুলি কমপক্ষে দু তিন মাইল দূরে। তাই ভেবে চিন্তে আগেই সব কিছু কিনে রাখতে হোত।

আমি san jose (উচ্চারণ স্যান হোজে) রওনা হই 26শে নবেম্বর, 2019 , মঙ্গলবার সন্ধায় । প্লেন ছাড়বে রাত 11:55.  আন্তর্জাতিক উড়ান, ঘন্টা তিনেক আগে বিমানবন্দরে পৌঁছতে বলে।  সেই মত বাড়ি থেকে বের হই সন্ধা সাতটা নাগাদ। চেক-ইন, এমিগ্রেসন, সিকিউরিটি চেক হয়ে গেল সওয়া ন’টার মধ্যে, খুব সহজেই। ঘন্টা দুই সময় রয়েছে হাতে। চুপচাপ বসে রয়েছি। ধ্রব পুণে থেকে  বার কয়েক ফোন করে খোঁজ নিল সব ঠিক ঠাক আছে কিনা।। পরাগ আমার জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করেছিল।

বাড়ি থেকে  মাছের ঝোল-ভাত ডিনার কোরে বেরিয়েছি, করার কিছুই নেই। এক কাপ কফি খেলাম,- ধ্রব অবশ্য অসময়ে কফি খেতে নিষেধ করে, অ্যাসিড হয়। বেশ relaxed  বোধ হচ্ছে। আজকাল দেখছি কোথাও যাবার নামে আমার উদ্বেগ হতে থাকে, অকারণে। নির্দিষ্ট  সময়ের পনেরো-কুড়ি মিনিট আগেই  প্নেনে বোর্ডিং হয়ে গেল।  যে ব্যক্তি হুইল-চেয়ার ঠেলছিলেন তাকে টিপস দিলাম দুশোটাকা। খুব খুসি দুশো টাকাা পেয়ে।  প্লেন  ফাঁকা, বিজনেস ক্লাস তো আরও ফাঁকা। বসার  অনেকটা জায়গা, শুয়ে আসা যায় ইচ্ছে করলে। আমার অবশ্য শুতে ইচ্ছে করছিল না। প্লেন ছাড়তে না ছাড়তেই আপ্যায়ন শুরু হয়ে গেল। প্রথমেই এল ড্রিঙ্ক, তারপর খাবার। আমি  শুধু এক গ্লাস বিয়ার নিলাম, ভাল ঘুম হবে ভেবে। জানলা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখতে দেখতে এগিয়ে চললাম। বাইরে আলো দেখে মনে হতে লাগল একের পর এক সহর পেরিয়ে যাচ্ছে।  একটু তন্দ্রার মত এসেছে, হঠাৎ কেবিনের আলো সব জ্বলে  উঠল। সিঙ্গাপুর এসে গেল নাকি। এখানে আড়াই ঘন্টা থামবে।  ঘড়িতে দেখি সবে তিনটে বাজে। সওয়া চারটেতে পৌঁছনোর কথা।  দেখতে না দেখতে আধ ঘন্টা আগে প্লেন সিঙ্গাপুর ল্যাণ্ড করল। এখানে ঘন্টা তিনেক স্টপওভার।

প্লেন পরিবর্তন কোরে অন্য টার্মিনাল থেকে  san Franciscoর প্লেন ধরতে হবে। হুইল চেয়ার তৈরি, আমাকে  অনেকটা দূরে, SilverKris business lounge এ নিয়ে গেল। তখন দেখলাম, সিঙ্গাপুর, চাঙ্গি airport কি বিশাল! আমি ইতিপূর্বে অনেক airport দেখেছি বিভিন্ন সহরে যাতায়াত করার সময়। ভারতের দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, ব্যাঙ্গালোর ইত্যাদি এবং বিদেশেও একাধিক বিমানবন্দর যেমন, লণ্ডনে হিথ্রো, জর্মনির ফ্রাঙ্কফ্যুর্ট  বা আমেরিকার নিউইয়র্কের জে.এফ.কেনেডি  প্রভৃতি। কিন্তু কোনটির আয়তন এত  বড় মনে হয় নি; একমাত্র ব্যতিক্রম  মনে হয়েছে San Francisco(SFO)  airport. সিঙ্গাপুরে প্লেন থেকে নামলাম এক নম্বর টার্মিনালে, আর SFO যাবার প্লেন ধরব তিন নম্বর টার্মিনাল থেকে ।  লাউঞ্জটি র কাছেই এই টার্মিনাল। অনেকটা পথ হুইলচেয়ার ঠেলে নিয়ে চলেছে। তারপর এক জায়গায় এসে থামল। পাশেই  রেললাইন, সেখানে একটা দুকামরার ট্রেন চলছে। এটি sky-train, খোলা আকাশের নীচে চলছে, প্যাসেঞ্জারদের এক টার্মিনাল থেকে অন্য টার্মিনালে নিয়ে যাচ্ছে বা ফেরত নিয়ে আসছে, অনেকটা কলকাতার ট্রামগাড়ির মত। airportএর ভিতরে এমন skytrain আর কোথাও দেখিনি।

 চারপাশের দোকানপাট লোকজন দেখতে দেখতে লাউঞ্জে পৌঁছলাম। লাউঞ্জটি বেশ বড়। পছন্দমত একটা সোফায় বসলাম। হাত মুখ ধুয়ে একটু ফ্রেস  হয়ে, ব্রেকফাস্টের উদ্দ্যোগ সুরু করলাম। সুন্দর ব্যবস্থা,  buffet. পছন্দমত খাবার সাজান রয়েছে, যা খুসি যত খুসি ,প্লেটে তুলে নেবার অপেক্ষায়। আমি একটা বড়  মোচাকৃতি বান রুটি নিলাম, যার ভেতরে শাকপাতা, তরকারি ভরা, আর একটা সিদ্ধ ডিম নিলাম। প্রত্যেক খাবারের বিবরণ লেখা ছিল, তা না পড়েই প্লেটে তুলেছি  ও খেয়েছি। পরে দেখলাম খাবারটি  ডিম নয় , prawn দিয়ে তৈরি খাবার । অনেকে  নিচ্ছে দেখে আমিও নিয়েছি ও খেয়েছি। আমার আবার prawn এ ভীষণ অ্যালার্জি। কিন্তু অলরেডি খাওয়া হয়ে গেছে, ভেবে কি হবে, বড় জোর বমি হয়ে বেরিয়ে যাবে। বমি হল না, তবে সারা পথ আর ক্ষিদে পেল না। প্লেনে প্রচুর, বিভিন্ন ধরণের অ্যাপেটাইজার, উপাদেয় খাদ্য এবং পানীয় কিছুক্ষণ অন্তর অন্তর নিয়ে আসছিল, আমি ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছিলাম। ভাবলাম এক গ্লাস বিয়ার খেয়ে দেখি, হয়ত হজম হয়ে যাবে।  বিয়ার খেয়েও ক্ষিদে পেল না, চুপ চাপ শুয়ে থাকলাম। প্লেনে শুয়ে আসার অভিজ্ঞতা, বিজনেস ক্লাস টিকিটের কল্যাণে  এবারই প্রথম । টিকিটের দাম ইকনমি ক্লাসের টিকিটের অন্তত আড়াই গুণ।  আমি যাতে আরামে যেতে পারি এবং ওদের ওখানে আরামে থাকতে পারি বা খেতে পারি, তার জন্য সূর্য বা পরাগের চেষ্টার কোন অভাব ছিল না। আমার কখন কি প্রয়োজন হতে পারে, আগে থাকতে ভেবে চিন্তে তার ব্যবস্থা করেছে, পয়সার কার্পণ্য না কোরেই। ওদের ওখানে প্রথম সপ্তাহটা  নেহাৎ  আমার শরীর ভাল ছিল না। তাছাড়া পরবর্তি তিন সপ্তাহ রাজা র হালে ছিলাম। একটা অস্বস্তি অবশ্য ছিল, -কথা বলার লোকের  বড় অভাব। ওখানে

লোকজন এমনিতেই বেজায় কম আমাদের দেশের তুলনায়, তার উপর কাছেপিঠে দোকানপাট নেই । রাস্তা দিয়ে বড় একটা লোক হাঁটে না, রাস্তায় ঝাঁকে ঝাঁকে গাড়ি চলছে, গাড়ি আর গাড়ি। লেকে ছুটির দিনে প্রচুর লোক আসত, তবে  অজানা অপরিচিত লোকের  সঙ্গে কেউ কথা বলে না। আগের বার যখন এসেছিলাম, আগের বাড়ির চারপাশে অনেক ভারতীয় পরিবার থাকতেন, তারা সব পার্কে বেড়াতে আসতেন। একাধিক সর্দারজির সঙ্গে চেনাজানা আলাপ পরিচয় হয়েছিল, সকালবেলাটা গল্প কোরে কাটত। এবার পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সারাদিন মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাক, আপনমনে নিজের কাজ কোরে যাও। সূর্যরা সারাদিন কাজের পর রাত আটটা নগাদ বাড়ি ফিরত। ফিরেই খাবারের যোগাড়, আমার পরের দিনের খাবারের ব্যবস্থা কোরে, খেয়ে, পৌনে ন’টায় শুতে চলে যেত। আর ছুটির দিনে ঠাসা প্রোগ্রাম, বাজার করা, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করা, বাইরে খেতে যাওয়া ইত্যাদি। তাই কথা বলার জন্য্ খুব বেশি সময় মেলেনা। আমিও এই ব্যবস্থায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। চারপাশের বাঙ্গালিদের সঙ্গে ওরা মেশে না, বাঙ্গালিরা নাকি কেবল ঝগড়া করে! আমি ওদের বোঝাই, প্রত্যেকের জীবনে বন্ধুর প্রয়োজন আছে। আজ হোক, কাল হোক বন্ধুর দরকার পড়বে।

বাড়িঘর পরিষ্কার করা, বাসনপত্র ধোওয়া এই সব ছিল সূর্যর কাজ। আর এসব কাজ ও করত  অত্যন্ত যত্ন সহকারে । সারা বাড়ি, থালা বাসন, কাপ প্লেট , রান্নার বাসন,-সবই ঝকঝকে তকতকে, যেন নতুন। পরাগ রান্না করত। বড় একটা ওয়াসিং মেশিন ছিল। সারা সপ্তাহের ময়লা জামা কাাপড় ধুয়ে শুকিয়ে মেশিন থেকে বের হত। এর ও দায়িত্ব ছিল সূর্যের। পরাগ গাড়ি চালাতে পারত না, সূর্য ই গাড়ি চালাত। এরই মাঝে, কর্মস্থলে একটা গ্রূপের লিডার ছিল ও। ইতিমধ্যেই অনেক গুলো পেটেন্ট পেয়েছে এবং ভাল জর্নালে অনেক পেপার ছাপিয়েছে। ভাল গবেষণা করছে। গুগুল স্কলারে দেখেছে 7000 এর বেশি রিসার্চ পেপার, নিজেদের কাজে ওর কাজের উদ্ধৃতি দিয়েছে। খুবই গর্বের কথা।

কি বলা সুরু করেছিলাম আর কোথায় চলে এলাম। সিঙ্গাপুর থেকে যথাসময়ে প্লেন ছাড়ল, এবং শুয়ে বসে ঘুমিয়ে SFO airport পৌছে গেলাম, ওখানকার সময় সকাল সাড়ে  আটটা নাগাদ, বুধবার, 27শে নবেম্বর, 2019.   বইরের তাপমাত্রা 8*C.  Air hostess বললেন,” আমি তোমার হুইল-চেয়ার ঠেলে নিয়ে যাব”। ভাল । কিন্তু কার্যকালে দেখলাম অন্য একজন চেয়ার ঠেলছেন। প্রকৃতপক্ষে চেয়ার ঠেলার  লোকের অভাব ছিল।  যিনি আমার চেয়ার ঠেলছিলেন, তিনি অন্য হাতে আরেকটি চেয়ার ঠেলা সুরু করলেন। স্যুটকেস সংগ্রহ কোরে কাস্টমস, ইমিগ্রেসন কোরে বেশ তাড়তাড়িই বেরিয়ে পড়লাম। সূর্য বাইরে অপেক্ষা করছিল, একটা মোটা কোট আর একটা টুপি হাতে। হুইল-চেয়ার ঠেলার লোকটিকে ওই টিপস দিল 20 ডলার, খুচরো ছিল না। বাইরে বেরিয়ে , গাড়ি পর্যন্ত যেতেই দেখি বেজায় ঠাণ্ডা । বাইরের তাপমাত্রা  8*c .  গাড়ির ভেতরে হিটিং চলছিল, বেশ আরাম।  গাড়িটি BMW, চলে খুব মসৃণ। সেদিনটা ওখানে ছুটির দিন, Thanks giving day, রাস্তায় বিশেষ গাড়ির ভীড় ছিল না। ঘন্টা খানেকের মধ্যেই  স্যান হোজে পৌঁছে গেলাম। একটা দোকান থেকে আমার ব্রেকফাস্টের খাদ্যদ্রব্য , যথা দুধ, কর্নফ্লেক্স , পাউরুটি  কিনে বাড়ি ঢুকলাম। ওরা দুধ বা পাউরুটি খায় না। পরে দেখলাম ওরা অনেক কিছুই খায় না, যেমন, ভাত, রুটি, মাংস ইত্যাদি। দুপুরে লাঞ্চ কোরে একটু সোফায় বসে থাকলাম, একটু বাংলা রম্য রচনার বই , তারাপদ রায়ের লেখা ,পড়লাম। দেখি ঘুম পাচ্ছে; একটু শুয়ে নিলাম, ঘুম অবশ্য এল না; সূর্য গেল পরাগ কে আনতে। ওরা ফিরল তখন সন্ধা হয়ে গেছে। একটু কথাবার্তার পর ডিনার কোরে শুয়ে পড়লাম। এইভাবে স্যান হোজের এবারের প্রথম দিন কাটল।

মোটামুটি এইভাবেই ওখানকার বাকি দিন গুলো কেটেছে। সোফাটি এবং বিছানা , দুটোই খুব আরামের। বছরখানেক আগে আমার sciatica হয়েছিল। ডঃশর্মার দেওয়া হোমিওপ্যাথিক ওষুধ colocynth 30, দিনে দুবার পাঁচদিন খেয়ে ব্যথা চলে যায়। এই  সময়, ডঃ শর্মা কতগুলি exercise দেখিয়ে দেন। সেগুলো অনেকদিন নিয়মিত অভ্যাস করি, আর বসা এবং শোবার কতগুলো বাধানিষেধ মেনে চলতে বলেন, যেমন, straight chair এ বসতে হবে, শক্ত বিছানায় শক্ত পাতলা বালিসে শুতে হবে ইত্যাদি। সূর্য সেই সময় কলকাতা এসেছিল। ডাইনিং স্পেসে, যে সোফায় বসে আমি  খুব আরাম পেতাম ও T.V. দেখতাম, সেই সোফাটি ওই ওখান থেকে সরিয়ে ছোট শোবার ঘরে ঢুকিয়ে দেয়, পরিবর্তে ডাাইনিং টেবিলের একটা কাঠের চেয়ার ওই জায়গায় রাখে। পরবর্তিকালে, আমি কাঠের চেয়ারটিতেই বসতাম, সোফাটিকে মেজানাইন ঘরে নিয়ে রাখা  হয় অর্থাৎ নির্বাসন দেওয়া হয়। সোফাটি 1980 সালে, খড়্গপুরে কেনা,  মাঝে দুএক বার সারানো হয়েছে, বসে কিন্তু বেশ আরাম ছিল। সূর্যদের স্যান হোজে বাড়ির সোফাটিও খুব আরামের, এখানে বসেই আমার দিনের প্রধান অংশ কেটেছে। ওখান থেকে ফেরার পর আমার শরীর মাঝে মাঝেই বিগড়াচ্ছে। ভাবছিলাম jet-lag, আর দোসর constipation, এর কারন। অপ্রত্যাশিত রূপে হঠাৎ,  2nd January, 2020  সারা সন্ধ্যা, পর পর তিনবার টক বমি হতে থাকে। সেদিন সকালে পায়খানা হয়। ভাবলাম, ভালই হল, জমা ময়লা বেরিয়ে গেল। হা হতোষ্মি! শুরু হল প্রবল মাথা ঘোরা।  এমন যে বালিস থেকে মাথা তুলতে পারছি না, এমন কি শুয়ে এপাশ ওপাশ করতে পারছি না , পাশের বাথরুমে  যেতে ভয় পাচ্ছি, পাছে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যাই। বাড়িতে আমি একা। খুব অসহায় অবস্থা। চুপচাপ মড়ার মত পড়ে রইলাম।  সৌভাগ্যক্রমে, কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম টের পাইনি। শেষ রাতের দিকে একবার উঠে বাথরুমে যাই, মাথা ঘোরার কথা মনে পড়ে নি। ঘুম ভাঙ্গে সাড়ে সাতটা নাগাদ। আধ ঘন্টা অন্তর দুটো ডোজ Bryonia 30 খেলাম, বিশেষ কাজ হল না।  কোনক্রমে, সিড়ির রেলিং ধরে দোতলা থেকে নেমে দরজা খুলে  পাশের বাড়িতে, সুভাস সরকারের দিদিকে শরীর খারাপের কথা বললাম, এবং বললাম দরজা খুলে রেখেছি, কাজের মাসিরা এলে যেন দরজা বন্ধ না করে।  আমি দোতলায় উঠে চুপচাপ শুয়ে রইলাম। দশটা নাগাদ কাজের মাসি পারুল এল। আমি ডঃ শর্মাকে ফোন কোরে শরীরের কথা জানালাম। উনি Gelsemium 30, এক ঘন্টা অন্তর তখনই দুটো ডোজ খেতে বলেন এবং যথা সত্বর অ্যালোপাথিক ওষুধ  vertin একটা ট্যাবলেট খেয়ে নিতে বলেন  immediate relief এর জন্য। আরও বলেন, পেটের সমস্যা ছাড়াও হয়ত spondilytis হয়েছে।  ভাগ্য ভাল, বাড়িতে gelsemium 30 ছিল। তখনই এক ডোজ খেলাম আর আমার প্রাক্তন ছাত্র অজয় লায়েক কে ফোন করলাম। ও আমাদের বাড়ির খুব কাছে, পাশের রাস্তায় থাকে। অতি সত্বর অজয় এল। আমি ছোট ঘরে বিছানায় শুয়ে আছি। একটা চেয়ার নিয়ে পাশে বসল। ওর সঙ্গে কথা বলতে বলতেই রান্না মাসি উত্তরা এল। চা বানিয়ে দিল। বিস্কুটের সাথে চা খেলাম। একটা চেয়ারে জলের বোতল, বিস্কুটের কৌটো এবং emergency ওষুধগুলো রেখে দিল, যাতে উঠতে না হয়। অজয় vertin tablet কিনে আনল এবং অন্যান্য টোটকা acidity র ওষুধ, যেমন,” ঈনো”, সঙ্গে কোরে এনেছে প্রয়োজনে খাবার জন্য। বেশ ভরসা পেলাম। বলল, spondilytis এর কোন ওষুধ নেই, একটা exercise দেখাল। ওই exercise নিয়মিত অভ্যাস কোরেই নাকি ওর spondilytis সেরেছে। অনেকক্ষণ আমার কাছে থাকল। সেদিন সন্ধাবেলা ডঃ দত্তচৌধুরিকে সঙ্গে কোরে আমাদের বাড়ি নিয়ে এল।

ডঃ দত্তচৌধুরি ভাল কোরে সব পরীক্ষা করলেন, blood-pressure খুব বেশি, 185/ 85. তখুনি একটা stamlo 5 ট্যাবলেট খেয়ে নিতে বলেন এবং এটি spondilytis বলে নির্ণয় করেন।  stugeron নামে একটা ওষুধ, দিনে দুটো কোরে, সকাল 9টা ও রাত 9টায়, 5 দিন খেতে বলেন। আরও বলেন vertin খাবার দরকার নেই। এই ওষুধ খাবার পর ধীরে ধীরে অনেকটা সুস্থ বোধ করি ও স্বাভাবিক কাজ কর্ম শুরু করি।

পরের সপ্তাহে ডঃ শর্মা খড়্গপুর থেকে আমাকে দেখতে কলকাতায় আমাদের বাড়ি এলেন। আমাকে দেখে ওঁর মনে হল, হার্টের একটু গোলমাল আছে, পূর্ণ বিশ্রাম দরকার। বিশ্রামে সারবে। উনি ফোন করে  ধ্রূবকে বলেন কলকাতা এসে ও যেন দেরি না কোরে আমাকে সঙ্গে কোরে পুণে নিয়ে যায়। ধ্রূবকে আমি বললাম যে আমি একাই প্লেনে যেতে পারব, ওর আসতে হবে না। সেই মত টিকিট কেটে পরের দিন, 8.1.2020 রাতের ফ্লাইটে আমি পুণে আসি,   ধ্রূব আমাকে নিয়ে বাড়ি ঢোকে রাত দুটোতে। তারিখ টা তখন 9.1.2020 হয়ে গেছে। এর পর থেকে, পুণেতে আছি, ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা চলছে । ভাল আছি। চিকিৎসার বিবরণ অন্যত্র লিখে রাখার ইচ্ছে আছে।  

আবার ফিরে আসি  স্যান হোজের কথায়। আগেই বলেছি, ওখানে এবার গিয়ে ভাল লাগছিল না, সারাদিন একা, তার উপর ঠাণ্ডা, কথা বলার লোক নেই, কেমন একটা অস্বস্তিকর পালাই পালাই অবস্থা। সূর্য  আমার ফেরার টিকিট পরিবর্তন করল। পাওয়া গেল, বড়দিনের পরের দিন, অর্থাৎ 26.12.2019 ,  এর টিকিট, রাত 11:50 তে ছেড়ে, হংকং, সিঙ্গাপুর হয়ে দমদম পৌছবে , 28.12. 2019, রাত পৌনে দশটায়। এই পরিবর্তনের জন্য খেসারত দিতে হল $435, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় 40k টাকা। আমি টাকাটা দিতে চাইলাম, সূর্য অবশ্য নিল না।

এর পরের দিনগুলি ছিল বৈচিত্রহীন, একই জীবনের পুনরাবৃত্তি। আমার লাঞ্চ ও ডিনারের ব্যবস্থা করেছিল একেবারে আমার কলকাতার বাড়ির মতন। ওখানে Freemont এ এক বাঙ্গালি ভদ্রমহিলা  ডাল, তরকারি মাছের ঝোল বাংলা মতে রান্না কোরে , প্লাস্টিকের কৌটোয় ভরে, বিক্রি করতেন। সেই খাবার কিনে এনে ফ্রিজে রাখা হোত। ভাতটা পরাগ রান্না কোরে ফ্রিজে রেখে দিত, সিদ্ধ চালের ভাত। খাবার  বড় সাাইজের দুপিস রুই বা কাতলা মাছের পাতলা ঝোল, একটু বেগুন বা ফুলকফি সহযোগে, দক্ষিণা $8 ডলার। টাকায় হিসেব করলে 576/-টাকা,-একটু চমকে ওঠার মত দাম। পরাগের মতে দাম বেশি না, ঠিকই আছে, তবে পাতলা ঝোল ওর অপছন্দ, আর বাংলা দেশের বরফে রাখা মাছ, কতদিনের কে জানে! আমার কিন্তু বেশ ভাল লাগত। প্রথম সপ্তাহটা jet-lag ও constipation ভুগিয়েছে, ভয় পেয়ে সূর্যকে ফেরার টিকিট reschedule করতে বলি এবং এক মাস আগে ফিরি। কিন্তু তারপরে আবার শরীর স্বাভাবিক হয়। মনে আনন্দ ফিরে আসে। আরামেই  বাকি দিনগুলি কাটতে থাকে।।

দেখতে দেখতে একমাস কাটতে চলল। ফেরার আগে কিছু স্মারক ও উপহার কিনলাম। চন্দ্রা3 আর অনিন্দিতার জন্য ব্যাগ, মুনিয়ার একটা বই, অনির্বানের টাই,

সমু, অভ্রর জন্য হূডি, ধ্রূবর একটা গেঞ্জি। ভেবে রেখেছি, মুনিয়ার হাতে কিছু টাকা দেব নিজের পছন্দমত জিনিস কেনার জন্য। দোকানে দোকানে প্রচণ্ড ভীড় চলছে।

24th ডিসেম্বর ক্রিসমাস-ঈভ, এদিন  ঠিক মধ্যরাতে অর্থাৎ রাত 12টায় যীশুখ্র্রীষ্টের জন্ম। এই দিন বিকেলের flight এ পরাগ ওর ছোট বোন মিঠুনদের বাড়ি গেল। মিঠুন ময়ূখরা ওদের দুই যমজ মেয়েদেরর (নাম খুব শক্ত, মনে থাকে না) নিয়ে থাকে College Station, Texas  26 তারিখ রাত 12টার flight এ সুর্যও ওদের ওখানে  রওনা দেয়, তবে তার আগে আমাকে কলকাতার flight এ তুলে দেয়। এই আমার san jose এ একমাস এর ইতি। বাকীটা SFO থেকে কলকাতা নিরাপদে সুস্থ শরীরে ফিরে আসা।  

প্রত্যাবর্তন- 

এবার  ঘরে ফেরা। 24  ও 25 লেক বন্ধ । তাই লেকের বাইরে হাঁটলাম।  পরের দিন আর হাঁটতে যাই নি। ব্যাগ গোছানই বড় কাজ। জিনিস অনেক বেড়ে গেছে। ব্যাগ গোছাতে অনেক সময় লাগলো কারন ব্যাগের সংখ্যা বাড়ানো চলবে না। শেষ পর্যন্ত ঠাসাঠাসি করে জিনিস সব ঢোকানো গেল। এবার রওনা হবার অপেক্ষা। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বের হলেই যথেষ্ট। পায়খানা স্নান করে দুটোর মধ্যে সব কাজ শেষ। কি করি , একটু শুয়ে নিলাম, প্লেনে তো ঘুম আসবে না । সাড়ে চারটে নাগাদ উঠে চা খেলাম দুধ চিনি ছাড়া। যোগাসন প্রাণায়াম কপালভাতি শেষ কোরেও দেখি সময় আর কাটে না। তারাপদ রায়ের লেখা রম্যরচনা ৩৬৫ নিয়ে বসলাম। সূর্য ততক্ষণে উঠে পড়েছে। ব্যাগ সব ঠিকমত প্যাক করা হয়েছে কিনা  দেখে নিল। তারপর জামকাপড় পড়ে আমরা airport এর দিকে রওনা দিলাম। ঘড়িতে দেখি বাজে সাড়ে ছয়টা। তাড়াতাড়ি গেলে ক্ষতি নেই। মালপত্র হল আমার দুটো স্যুটকেস, আর একটা ল্যাপটপের ব্যাগ, সূর্যর শুধু একটা কাঁধে ঝোলান ব্যাাগ। SFO airport এর কিছুটা দূরে, long-time-parkng এ গাড়ি পার্ক কোরে আমরা মালপত্র নিয়ে airport এর shuttle বাসে কোরে SFO- international terminal এ যাব।

সাত-পাঁচ না ভেবে রওনা দিলাম। ক্রিসমাসের পরের দিন, রাস্তা তুলনায় ফাঁকা, দেখতে দেখতে চললাম, SFOর কাঁছাকাছি আসতেই বিস্তীর্ণ অঞ্চল আলো ঝলমল করছে। shuttle-bus terminal পৌঁছে, গাড়িটা গ্যারেজে ঢুকিয়ে, মালপত্র নিয়ে বাস-স্টপে গিয়ে দাঁড়ালাম। বেশ ঠাণ্ডা লাগছে, যদিও গায়ে প্রচুর গরম জামা চাপিয়েছি। বাস এসে গেল, প্রায় খালি বাস, এক এক কোরে  সব টার্মিনাল ঘুরছে। কি বিশাল airport!  International terminal এ নামলাম ও হেঁটে ভেতরে ঢুকলাম। একটু তাড়াতাড়ি এসে পড়েছি, । চেক-ইন কোরে একটু অপেক্ষা করলাম হুইল-চেয়ার নিয়ে একটা মেয়ে এল। সিকিউরিটি চেকে বিরাট লাইন।  মেয়েটি অত্যন্ত দ্রুত তৎপরতার সঙ্গে আমাকে  এগিয়ে নিয়ে চলল। সূর্য এবার বিদায় নিল, ওর ফ্লাইট ধরবে। সিকিউরিটি চেকের পর মেয়েটি আমাকে business lounge এ বসিয়ে দিল। আমার ফ্লাইট 11:50, বোর্ডিং 11:15. ঘড়িতে দেখি সওয়া নয়টা। মেয়েটি এগারোটায় আসবে বলে বিদায় নিল। ওকে কোনো টিপস দিলাম না, বোর্ডিংয়ের সময় দেব ভেবে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, অন্য একাধিক চেয়ার ঠেলার লোক রাত দশটা থেকে  বোর্ডিং বে তে নিয়ে যাবার জন্য অনবরত বিরক্ত করা শুরু করল। ১১টায় গেলে নাকি অনেক দেরি হয়ে যাবে। তাই, এদের ই এক জনের সঙ্গে উঠে রওনা দিলাম। স্যাণ্ডউইচ, স্যালাড সসেজ ইত্যাদি হালকা খাবার  আগেই খেয়ে নিয়েছিলাম। যথাসময়ে প্লেনে উঠলাম, ভাল সিট জানালার পাসে। পর পর নানা পানীয় ও খাবার আনতে লাগল। তোমাদের কনিয়াক নেই বলতেই কনিয়াক নিয়ে এল। কনিয়াক খেয়ে ঘুম লাগালাম। ঘুম ভাঙ্গল হংকং এসে গেছে। ঘন্টা খানেকের স্টপেজ, আমি বসেই রইলাম। ছাড়ার পর ব্রেকফাস্ট খেলাম। জানালা দিয়ে দেখতে দেখতে চললাম। এলাম চাঙ্গি এয়ারপোর্ট , সিঙ্গাপুর। আট ঘন্টা স্টপেজ। হুইল – চেয়ার  আমাকে নিয়ে এল Silverkriss বিজনেস লাউঞ্জে। আমার পরিচিত জায়গা। এক মাস  আগে SFO যাবার পথে  এখানে আড়াই ঘন্টা ছিলাম। চমৎকার খাবার ও বিশ্রামের জায়গাঁ। এবার আট ঘন্টা কাটিয়ে আবার অন্য প্লেনে উঠলাম। দেখতে দেখতে  দমদম, নেতাজী সুভাস বিমান বন্দর এসে গেল। ঘড়িতে রাত পৌনে দশটা। হুইল চেয়ার তৈরি ছিল।  ব্যাগেজ ক্লেমে আমার স্যুটকেস দুটো নিয়ে এগিয়ে চললাম। পুরো এয়ারপোর্ট টাই কেমন যেন অন্ধকার অন্ধকার লাগছিল। কাস্টমস এ কোন কিছু দেখতে চাইল না। বাইরে বেরিয়ে এলাম। ট্যাক্সি বুক করতে গিয়ে দেখি মোবাইলে চার্জ নেই। চেয়ার যিনি ঠেলছিলেন, তিনি একটি উবের ট্যাক্সি  বুক করে দিলেন। তাকে 200টাকা টিপস দিলাম, খুব খুসি। দুপাস দেখতে দেখতে নিরবিঘ্ণে সন্তোসপুরে বাড়ি এসে ঢুকলাম, রাত তখন সোওয়া এগারোটা। চারদিক বেশ নিঃঝুম। আমার স্যান হোজে ভ্রমণ শেষ।

প্রদীপ নিয়োগী, পুণে, 3.7.2020



Leave a comment